
চোরাই গাড়ি বিকি-কিনির দায়ে এক ডাক্তারসহ চারজনকে আটক করেছে র্যাব-৯। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে নগরীর নয়াসড়ক থেকে গতকাল সোমবার রাতে (রোববার দিনগত রাত) তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা দীর্ঘদিন থেকে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে সিলেটে চোরাই গাড়ি বিক্রির একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে বলে র্যাব জানায়।
আটককৃতরা হলো নয়াসড়ক এলাকার আব্দুল মুছাব্বিরের ছেলে ডা. ফাহমী ইকবাল রাব্বী (৩৮), দক্ষিণ সুরমা এলাকার মৃত আব্দুল মোতালিবের ছেলে রুমেল আহমেদ (৩৫), আম্বরখানা বড়বাজার এলাকার মো. ইলিয়াজুর রহমানের ছেলে মো. ইমাদুর রহমান রাফি (২৮) ও গোলাপগঞ্জের দড়া গ্রামের মোজাহিদ আলী ছেলে মো. শাহআলম মুন্না (২৬)।
র্যাব জানায়, ডা. ফাহমি ইকবাল রাব্বী নিজ পেশার বাইরে গত ৫/৬ বছর ধরে গাড়ি কেনা-বেচা করে আসছেন। নয়াসড়কস্থ তার বাসার (বিহঙ্গ ২২/এ, আনোয়ারা মতিন ভিলা) নিচতলায় ‘সিলেট কার গার্ডেন’ নামে একটি শো-রুম পরিচালনা করেন তিনি। সেখানে চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গাড়ি এনে বিক্রি করতেন। চট্টগ্রাম থেকে তাকে গাড়ি আমদানি করে দিতেন নজরুল, লিটন, আনোয়ার নামের কয়েকজন। ডাক্তার হিসাবে পরিচিতি থাকার কারণে তিনি দ্রুতই গাড়ি ব্যবসায় একটি ভালো অবস্থান তৈরি করেন। দ্রুতই পরিচিত ডাক্তারদের মাঝে বড় আকারে একটি ক্রেতা নেটওয়ার্ক তৈরি করে ফেলেন রাব্বি। ব্যবসার শুরুতে বিশ^াস ও আস্থা স্থাপন করে পরবর্তীতে শুরু করেন প্রতারণা।
র্যাবের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে রাব্বি অন্ততঃ ২০-২৫ জন সমাজের উঁচু শ্রেণির ব্যক্তির কাছ থেকে গাড়ি বিক্রির কথা বলে টাকা নেন, কিন্তু পরবর্তীতে কোনো গাড়ি প্রদান করেননি। এছাড়াও ক্রেতাদের প্রত্যাশিত ব্র্যান্ড না দিয়ে অনেক ক্ষেত্রে অন্য গাড়ি দিয়েও প্রতারণা করেন। সেরকম প্রতারণা শিকার ডা. ফজলুল হক ও আব্দুস সামাদ নামের দু’জন ইতোপূর্বে তার বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন জানায় র্যাব।
প্রতারণার শিকার হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন আরো অনেকে। সেরকম কয়েকজন হলেন ডা. রানা (২৩ লাখ), ডা. ফজলুল হক (১৫ লাখ), ডা. হেলাল (৫ লাখ), ডা. মজিদ (১০ লাখ), ডা. শফি (২৫ লাখ), আব্দুস সামাদ (৩১ লাখ), নজরুল (২০ লাখ), নকিব (১৭ লাখ) ও মাহতাব (১১ লাখ)।
র্যাব জানায়, ঢাকা ও চট্টগ্রামের চোরাই গাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে শুভ ও রুমেল নামের দু’জন সিলেটে নিয়ে এসে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করতো। এদের গাড়ি ডা. রাব্বি নিজস্ব শো-রুমে রেখে বিক্রি করতেন। চোরাইকৃত এসব গাড়ির জাল কাগজ বিভিন্ন পন্থায় তৈরি করতো এই চক্রটি। এমন একটি ডিএক্স করোলা মডেলের গাড়ি গতকাল সোমবার সকালে আটককৃত মুন্নার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে র্যাব। আটককৃত চারজনই গাড়ি চোর চক্রের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত বলে র্যাবের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।
ডা. রাব্বীর তথ্যে কাজীটুলা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় আরো একটি এক্স সেলুন মডেলের করোলা গাড়ি ও করোলা এক্সিও মডেলের আরেকটি গাড়ি মীরের ময়দান থেকে উদ্ধার করে র্যাব। উদ্ধারকৃত প্রাইভেটকার তিনটি ও গ্রেফতারকৃতদের এসএমপির কোতয়ালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।