
স্টাফ রিপোর্টার : আরিফুল হক চৌধুরী বলেছেন, আমাকে জনগন ভোট দিয়ে মেয়র বানিয়েছেন। কেবল জনগনই আমাকে বহিস্কার করতে পারে।
তাকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বহিস্কার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আরিফুল হক এ কথা বলেন।
দুই বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বুধবার সন্ধ্যায় কুমাড়পাড়ায় নিজ বাসায় ফেরেন আরিফ। এসময় সাংবাদিকদের সাথে আলাপ করেন এই বিএনপি নেতা।
আরিফ বলেন, সকলের সহযোগীতা ও ভালোবাসায় আমি মুক্তি পেয়েছি। আমার মা অসুস্থ, আমি নিজেও অসুস্থ। আদালত এসব বিবেচনায় নিয়ে আমাকে জামিন প্রদান করেছেন।
২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় এক আদেশে আরিফুল হককে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বহিস্কার করে। ২০১৩ সালের ১৫ জুন সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন আরিফ।
বাসায় ঢুকেই আরিফুল হক নিজের মেয়েক জড়িয়ে ধরেন। এসময় পরিবারের অন্য সদস্যরাও এগিয়ে আসেন। এরপর আরিফ যান পাশের কক্ষে। যেখানে অপেক্ষায় আছেন তাঁর মা। সে কক্ষে ঢুকে আরিফ পায়ের পায়ে ধরে সালাম করেন। এসময় ছেলে বুকে টেনে নেন মা আমিনা খাতুন।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত আসামী হিসেবে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আরিফ। ওইদিন আদালত তাঁর জামিন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
দুই বছর পর চারটি মামলায় জামিন পেয়ে বুধবার সন্ধ্যায় কারামুক্ত হন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। মাঝে গত বছরের ২৯ মার্চ থেকে অসুস্থ মাকে দেখার জন্য ১৫ দিনের জন্য প্যারোলে মুক্ত ছিলেন।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা এবং সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় বোমা হামলার দুটি মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান তিনি।
এর আগে দুপুরে সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয় আরিফুল হক চৌধুরীকে।
দ্রুত বিচার আদালতের পিপি কিশোর কুমার কর জানান, জেলা ও দায়রা জজ মনির আহমদ পাটোয়ারীর আদালতে তার উপর জারি করা প্রডাকশন ওয়ারেন্ট শুনানি শেষে তা প্রত্যাহার করার আদেশ দেওয়া হয়। আদেশের কপি কারাগারে পৌঁছার পরই মুক্তি দেওয়া হয় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত এই মেয়রকে।
সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া হত্যা মামলায় ২০১৪ সালের ১০ ডিসেম্বর আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জি কে গউছ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১১ জনের নাম যোগ করে সংশোধিত সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি।
এরপর ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর ওই ১১ জনকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করে আদালত। পরোয়ানা জারির পর একই বছরের ৩০ ডিসেম্বর আরিফুল আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
২০০৪ সালের ২১ জুন দুপুরে দিরাইয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় বোমা হামলা হলে এক যুবলীগকর্মী নিহত ও ২৯ জন আহত হন।
ওই ঘটনায় দিরাই থানায় করা হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় আরিফুলসহ ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরে ওই দু’টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় আরিফুলকে।