• ৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৫শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সালমান শাহ হত্যার বিচার, ২০ বছর তদন্তের ফাঁদে

admin
প্রকাশিত জানুয়ারি ১৩, ২০১৭
সালমান শাহ হত্যার বিচার, ২০ বছর তদন্তের ফাঁদে

বিনোদন ডেস্ক : তদন্তের ফাঁদে ২০ বছর ধরে আটকে আছে প্রয়াত জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যার বিচার। সিআইডি থেকে বিচার বিভাগীয়, বিচার বিভাগীয় থেকে র‌্যাব, র‌্যাব থেকে পিবিআই। এভাবেই কেটে গেছে ২০টি বছর। আলোর মুখ দেখেনি তদন্ত প্রতিবেদন। ফলে শুরু হচ্ছে না বিচার। কয়েক মাস পর পর এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ও শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। নায়ক সালমান শার বৃদ্ধ মাতা ছেলে হত্যার বিচারের দাবিতে ধার্য তারিখে আদালতে আসেন। সালমান ভক্তদের সাথে আদালত প্রাঙ্গনে মানববন্ধন, মিছিল-সমাবেশ করেন। কিন্তু থমকে আছে আলোচিত এ হত্যা মামলার বিচারকার্য।

নথি সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর জনপ্রিয় চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ নিহত হন। সে সময় তার বাবা প্রয়াত কমরউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন।

১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই সালমানের বাবা ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে সিএমএম আদালতে একটি অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিএমএম আদালত অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যার অভিযোগটি একসঙ্গে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

পরবর্তী সময়ে একই বছরের ৩ নভেম্বর সিআইডি ঘটনাটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করে সিআইডি। একই বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালত সিআইডি পুলিশের দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন।

কিন্তু সিআইডির দাখিলকৃত প্রতিবেদনে সালমানের বাবা সন্তুষ্ট না হয়ে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন মামলা করেন। ওই রিভিশন মামলার ওপর শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটিকে ফের বিচার বিভাগীয় তদন্তে জন্য নির্দেশ দেন। এরপর প্রায় ১২ বছর ধরে এ মামলা বিচারবিভাগীয় তদন্তে ছিল।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট সিএমএম বিকাশ কুমার সাহার কাছে মহানগর হাকিম ইমদাদুল হক বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহের মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

পরবর্তী সময়ে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সিএমএম আদালতে আরেকটি নারাজি দাখিল করেন।

নারাজিতে তিনি বলেন, এটা একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এ হত্যা মামলার সঠিক তদন্ত চাই। আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জন তার ছেলে সালমান শাহর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। মামলাটি সঠিকভাবে তদন্ত হয়নি।

যার শুনানি শেষে বিচারক মামলাটি র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব) তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রক্ষ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করেন।
যা পরে ঢাকার বিশেষ জজ ৬-এর বিচারক ইমরুল কায়েস রিভিশন মঞ্জুর করেন। র‌্যাব মামলাটি আর তদন্ত করতে পারবে না বলে আদেশ দেন। বর্তমানে এ হত্যা মামলার নথি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিআইবি) দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মেহেদী হাসানজানান, গত ৭ ডিসেম্বর বিচারক আনুষ্ঠানিকভাবে পিবিআইবিকে নতুন করে মামলাটি তদন্তে জন্য নির্দেশ দেন। পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম মামলার নথি (কেস ডকেট) আদালত থেকে বুঝে নিয়েছেন।

ঢাকা জর্জ কোর্টের স্পেশাল পিপি আজাদ রহমান বলেন, ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো উদঘাটন হয়নি মৃত্যুটি অপমৃত্যু ছিল না হত্যাকাণ্ড। এটা বিচার বিভাগের জন্য দুঃখজনক, তদন্ত সংস্থাগুলোর জন্য লজ্জাজনক। আমরা চাই দ্রুত এ মামলার তদন্ত শেষ হোন। মামলাটি নিষ্পত্তি হোক।