• ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২২শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

২০১৭ সালের মধ্যে শেষ হলো না সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মাণ কাজ

admin
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২৯, ২০১৭
২০১৭ সালের মধ্যে শেষ হলো না সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মাণ কাজ

বাংলার আলো ডেস্ক :::::::: চার দফা মেয়াদ বৃদ্ধি হয়েছে। ব্যয়ও বেড়েছে। তবু শেষ হচ্ছে না সিলেট আধুনিক ক ন্দ্রীয় কারাগার নির্মান কাজ। সর্বশেষ চলতি ডিসেম্বরে এই কারাগার নির্মান কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো। তবু এই সময়েও শেষ হচ্ছে না ২২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মানাধীন এই কারাগারের কাজ।

আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিল নাগাদ এই কারাগার নির্মান কাজ শেষ হতে পারে বলে জানিয়েছে নির্মানকারী প্রতিষ্ঠান গণপূর্ত বিভাগ।

২০১১ সালের ১১ আগস্ট সিলেটের বাদাঘাটে কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মান কাজের উদ্বোধন করা হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আবুল মাল আবদুল মুহিতের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিলো নগরীর মধ্যখান থেকে কারাগার সরিয়ে নিয়ে পুরনো কারাগারের স্থলে উন্মুক্ত উদ্যান নির্মান করা। মুহিত তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে এ বিষয়ে উল্লেখ করেছিলেন, ‘উদ্যানহীন এই নগরে এই উদ্যানটি হবে নগরীর ফুসফুস। এখানে মানুষ শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার একটু সুযোগ পাবে।’ কিন্তু ছয় বছরেও নতুন কারাগারের নির্মান কাজ শেষ না হওয়ায় উন্মুক্ত উদ্যান নির্মানের প্রতিশ্রুতিও বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

২০১১ সালে নির্মান নতুন কারাগারের নির্মান কাজ শুরু পর ব্যয় ধরা হয়েছিলো প্রায় ১৯০ কোটি টাকা। সে সময় ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়। তবে এই মেয়াদকালের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়ায় ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। তবে এই সময়ের মধ্যেও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হাবিব কন্সস্ট্রাকশন কোম্পানি, কৈশলী কন্সট্রাকশন কোম্পানি, জেড কন্সট্রাকশন কোম্পানি, ঢালি কন্সট্রাকশন কোম্পানি ও জেবি কন্সট্রাকশন কোম্পানি। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আরেকদফা সময় বৃদ্ধি করা হয়। এবার চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় গণপূর্ত বিভাগ। তবে এই সময়ের মধ্যেও কাজ শেষ না হওয়ায় চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত আবার সময় বাড়ানো হয়। তবে ডিসেম্বরের মধ্যেও শেষ হচ্ছে না কাজ। নির্ধারিত সময়ে নির্মানকাজ শেষ না হওয়ায় বেড়েছে নির্মান ব্যয়ও। ১৯০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে কারাগারের নির্মান ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২২৭ কোটি টাকা।

তবে সংশ্লিস্টরা জানিয়েছেন, নির্মান কাজ শেষে ব্যয় আরও কিছুটা বাড়তে পারে।

গণপূর্ত অধিদপ্তর সিলেটের উপসহকারী প্রকৌশলী শাহারিয়ার চৌধুরী বলেন, এখনো সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, সংযোগ সড়ক, গ্যাস সংযোগ, ফিনিশিংসহ কিছু কাজ বাকী রয়েছে। আশা করছি, আগামী মার্চ এপ্রিলের মধ্যে সব কাজ শেষ হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, প্রথমদিকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো কাজে দেরী করেছে। এছাড়া টানা বৃষ্টির কারণেও দেরী হচ্ছে। এছাড়া নতুন করে আরও জায়গা অধিগ্রহণের কারণেও কিছুটা দেরী হয়। এখন সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপনের জন্য আরও কিছুটা সময় লাগবে। কারণ এ ধরণের প্লান্ট নির্মানে আমাদের অভিজ্ঞতা নেই। এই প্লান্ট স্থাপনের জন্য আমাদের প্রকৌশলীরা বিদেশ থেকে ট্রেনিং নিয়ে এসেছেন। আশা করছি, এখন আর দেরী হবে না।

১৭৮৯ সালে সিলেট শহরের কেন্দ্রস্থল ধোপাদিঘীর পাড়ে ২৪ দশমিক ৬৭ একর জমির ওপর নির্মাণ করা হয়েছিল সিলেট জেলা কারাগার। নির্মাণের সময় থেকে নানা সময়ে কয়েকটি স্থাপনা নির্মাণ এবং ১৯৯৭ সালে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রূপান্তরের পর এই কারাগারের ধারণ ক্ষমতা দাঁড়ায় ১ হাজার ২১০ জনে।

আর নগরী থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে সিলেট সদর উপজেলার বাদঘাটে ৩০ একর জমির উপর নির্মানাধীন আধুনিক কেন্দ্রীয় কারাগার আড়াই হাজার বন্দি ধারণের উপযোগী করে নির্মাণ করা হচ্ছে।

সংশ্লিস্টরা জানান, নির্মানাধীন কেন্দ্রীয় কারাগারে সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, একশ শয্যার পাঁচ তলা বিশিষ্ট হাসপাতাল, ২০ শয্যার মানসিক হাসপাতাল, ২৫ শয্যার যক্ষা হাসপাতাল, স্কুল ও লাইব্রেরি ভবন ছাড়াও কর্মকর্তা-কর্মকর্তাদের জন্য ১৩০টি ফ্ল্যাট রয়েছে।

নতুন কারাগারে স্টাফদের জন্য হাসপাতাল, ২টি ওয়াচ টাওয়ার ও বন্দিদের জন্য মোবাইল ফোন করার ব্যবস্থা থাকবে।

সরেজমিনে বাদাঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, অবকাঠামো নির্মান শেষ হলেও এখন কারগারের সংযোগ সড়ক নির্মান করা হয়নি। নেই গ্যাস সংযোগও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শ্রমিক বলেন, ৫টি কন্সট্রাকশন কোম্পানির মাধ্যমে কাজ হচ্ছে কিন্তু যে পরিমান শ্রমিক নিয়োগ করার কথা তেমন হয়নি। ফলে নির্মাণ কাজ ধীর গতিতে হচ্ছে।

সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল জলিল বলেন, নতুন কারাগাওে এখনও গ্যাস সংযোগ প্রদান করা হয়নি। সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্টও হয়নি। আগামী মার্চ এপ্রিলে কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি। তখন কয়েদি স্থানান্তর শুরু হবে।